
করোনাভাইরাসে দেশে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে। শুরু থেকেই সংক্রমণের সবচেয়ে বিপজ্জনক জেলার মধ্যে অন্যতম একটি হলো নারায়ণগঞ্জ। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৯২৫ জনে দাঁড়ালো।
করোনা পরীক্ষার শুরুর দিন থেকে অর্থ্যাৎ গত ৩১ মার্চ করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরুর পর প্রথম ৩০ দিনে মোট শনাক্তের হার ছিলো ৮৯৫ জন। পরের দুই মাসে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে আরো দ্রুতগতিতে। বর্তমানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছুঁই ছুঁই।
শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় ৪১৪ টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে আরও ১৩৭ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ৭২ জন নগরের এবং ৬৫ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।’ এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেন নি কেউ। সিভিল সার্জনের তথ্য অনুযায়ী জেলায় এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ১১০ জন।
বাংলাদেশে প্রথম ৮ মার্চ তিনজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এদের মধ্যে দু’জন ছিলো নারায়ণগঞ্জের। পরবর্তীতে গত ২৯ মার্চ সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের রসুলবাগ এলাকায় ৫০ বছর বয়সী এক নারী শ্বাসকষ্ট ও জ্বরে আক্রান্ত হলে স্বজনরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হলে স্বজনরা তা না মেনে ওই দিনই বাড়িতে ফেরত নিয়ে যান।
পরদিন (৩০ মার্চ) ওই নারী আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরে কুর্মিটোলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর এ পাঠায়।
এর মধ্যে স্বজনরা লাশ নারায়ণগঞ্জের বন্দরের বাড়িতে নিয়ে আসেন। এর আগে ওই নারীর হার্ট এ্যাটাক হয়েছিল বলে জানা যায়। তবে স্বজনরা স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ভেবে ওই নারীর দুই ছেলে এবং মেয়ের জামাতাসহ অন্যান্য নিকটাত্মীয়, স্বজনরা স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করেন।
০২ এপ্রিল দুপুরে আইইডিসিআর এর পরীক্ষায় ওই নারীর করোনা ভাইরাস পজেটিভ বলে শনাক্ত হলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ওই এলাকা লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরে এক-দুই করে করোনার পরিস্থিতি অবনতি হতে শুরু করে।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৯২৫ জন। এর মধ্যে শুধুমাত্র নগরীতে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা মোট রোগীর প্রায় ৩৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: আক্রান্ত , করোনা , করোনাভাইরাসে
No posts found.